১৯৭৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর এমন একটি ঘটনা ঘটে, যা সারা বিশ্বকে নাড়া দিয়ে গিয়েছিল। এই দুর্ঘটনায় কয়েক মিনিটের মধ্যে কয়লা খনিতে চাপা পড়ে ৩৭৫ জনেরও বেশি মানুষ। এখানে গোড্ডায় অবস্থিত খনিতে ভূমিধ্বসের কারণে ১৩ জন শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছিলেন।

১৯৭৫ সালে খনি দুর্ঘটনার উপর একটি চলচ্চিত্রও নির্মিত হয়েছিল। সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত এই ছবিতে দুর্ঘটনার দৃশ্য একবার দেখলে মানুষ ভয় পেয়ে যায়।

১৯৭৫ সালের চাসনালা খনি দুর্ঘটনা সেই বড় দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে একটি ছিল, যা স্মরণ করলেই মানুষের আত্মা কেঁপে ওঠে। যখন চাসনালায় এই ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটেছিল, তখন কংগ্রেস কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়েই শাসন করছিল এবং চণ্ডীগড়ে একটি সভা চলছিল। খনি দুর্ঘটনার খবর আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ে। চাসনালা খনি দুর্ঘটনায় বিশ্বের দশটি বড় খনি দুর্ঘটনার মধ্যে গণনা করা হয়।

আরও পড়ুন: কেন মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের সমাধির জন্য দিল্লির পরিবর্তে ঔরঙ্গাবাদকে বেছে নেওয়া হয়েছিল                   

আরও পড়ুন: আতশবাজি কি মুঘলদের মাধ্যমেই ভারতে পৌঁছেছিল

কোল ইন্ডিয়ার আওতাধীন ভারত কোকিং কোল লিমিটেডের চাসনালা কোলিয়ারি, ক্যাপিট নম্বর ১ এবং ২ এর ঠিক উপরে অবস্থিত একটি বড় পুকুরে খনির ছাদ ভেঙে পড়ে। খনিতে কর্মরত সকলেই এই প্রলয়ঙ্করী বন্যায় আটকা পড়ে। জল নিষ্কাশনের জন্য পাম্পগুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছিল। কিন্তু তাতেও যেন কাজ হচ্ছিল না। খনিতে আটকে পড়া অধিকাংশ লোকজনকে বের করা সম্ভব হয়নি। কোম্পানির ম্যানেজার নিহতদের তালিকা নোটিশ বোর্ডে লাগিয়ে দেন।

এরপর ‘কালাপাথর’ ছবির মাধ্যমে চাসনালার খনি দুর্ঘটনাকে সবার সামনে তুলে ধরেন যশ চোপড়া। তার নির্মিত এই চলচ্চিত্র সারা দেশবাসীকে নাড়িয়ে দিয়ে গিয়েছিল। ছবিটি ১৯৭৯ সালের ২৪ আগস্ট সারাদেশের প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হয়েছিল। সেই সময়ের অনেক হিট ছবির রেকর্ডকে পেছনে ফেলে দিয়েছিল ‘কালাপাথর’। ছবিটি ব্লকবাস্টার প্রমাণিত হয়। ঝাড়খণ্ডের গিদ্দি ওয়াশিতে ‘কালাপাথর’-এর শুটিং চলাকালীন শত্রুঘ্ন সিনহার সঙ্গে এসেছিলেন যশ চোপড়া। তিনি এখানে গিদ্দি রেস্ট হাউসে অবস্থান করছিলেন। যেখানে শত্রুঘ্ন সিনহা ও যশ চোপড়ার সঙ্গে ছবি তোলার প্রতিযোগিতা হতো। অমিতাভ বচ্চন, শশী কপূর, শত্রুঘ্ন সিনহা, রাখি, নীতু সিংয়ের মতো অনেক অভিনেতা অভিনয় করেছিলেন ‘কালাপাথর’-এ।