বাংলার বেশ কিছু প্রাচীন পুজো রয়েছে যেগুলো প্রাচীনত্বের
ধারা বয়ে নিয়ে চলেছে বছরের পর বছর ধরে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমবর্ধমান তার জৌলুস।
তেমনই এক পুজো হল ঠাকুরদাস পালিত লেনের রামগোপাল সাহার বাড়ির পুজো।
অবিভক্ত বাংলার এক বর্ধিষ্ণু ব্যবসায়ী ছিলেন রামগোপাল সাহা।
সুরার ব্যবসা ছিল তাঁর। তাঁরই পৈতৃক বাড়ির ঠাকুরদালানে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয়
দূর্গাপুজো। এই বছর ১৬৯ তম বর্ষে পা দিল সাহা বাড়ির দূর্গা পুজো।
১৮৮ বছর আগে ঠাকুরদাস পালিত লেনে তৈরি হয়েছিল সাহা বাড়ি।
সেই সময় ওই এলাকার জমিদার ছিলেন রামগোপাল সাহা। তিনিই প্রথম শারদীয়ার আরাধনা শুরু
করেন। সাহা বাড়ির দূর্গা প্রতিমা ১৬৮ বছর
পেরিয়েও সাবেকিয়ানা ধরে রেখেছে। তাই উমা এখানে একচালা ডাকের সাজে সজ্জিতা। ঠাকুর
বানানো থেকে ডাকের সাজের শিল্পী সকলেই বংশ পরম্পরাই কাজ করে এসেছেন এই পরিবারে। কিছুদিন
আগে প্রয়াত হয়েছেন শিল্পী আদিত্য মালাকার। তিনি একসময় ডাকের সাজের কাজে রাষ্ট্রপতি
পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন। এতদিন পর্যন্ত তাঁর তত্ত্বাবধানেই মায়ের সাজসজ্জার
সামগ্রী তৈরি করতেন অন্যান্য কারিগরেরা।

আরও পড়ুন: গোচরণে ঘরের মেয়ে ‘রাজনন্দিনী’
আরও পড়ুন: সমাজ থেকে ব্রাত্য সুবর্ণবণিকরা এগিয়ে নিয়ে চলেছেন মায়ের পুজো
সাহা পরিবারে রথের দিন হয় কাঠামো পুজো। বাড়িতেই গড়া হয়
ঠাকুর। ডাকের সাজের কাজও হয় ঠাকুরদালানেই। বর্ধিষ্ণু প্রাচীন পরিবারটিতে পশুবলির
নিয়ম নেই। তবে সন্ধিপুজোয় রয়েছে একটি বিশেষত্ব। সাহাবাড়ির নিয়ম অনুযায়ী যদি কোনও
নারী মায়ের কাছে মানত করে থাকেন এবং তা পূরণ হয় তাহলে দেবীর সামনে বুক চিঁড়ে তাঁকে
রক্ত দান করতে হয়। অষ্টমী-নবমীতে চলে ধুনুচি নাচ।
