সারা বিশ্ব করোনা জ্বরে আরান্ত। কবেএই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি মিলবে তা জানা নেই৷ তবুও ভ্রমণ পিপাসু মানুষ আশায় আশায় দিন গুণছেন কবে আবার তল্পি তল্পা গুটিয়ে ঘুরে আসতে পারবেন। আর ভ্রমণ প্রসঙ্গের জন্য আজ রইল একেবারে কম খরচে প্রায় বাড়ির কাছেরই একটি জায়গা। সেই যে গুরুদেব বলে গিয়েছেন, 'দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া, ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া'। আজ আমরা আলোচনা করব বাঁকুড়ার রানি মুকুটমণিপুর নিয়ে। রাত্রিযাপনের জন্য এখানে রয়েছে ছোট তাবুরব্যবস্থা। তাই বিলাসবহুল হোটেলের দরকার লাগে না, প্রকৃতির কোলে নিশ্চিন্ত জীবন যাপন করতে পারবেন সকলে। আর এইভাবে নিশিযাপনে এক অপূর্ব অভিজ্ঞতার সাক্ষীথাকতে পারবেন পর্যটকরা।
যে কোনও প্রকৃতিপ্রেমীর কাছে মুকুটুমনিপুর যাকে বলে সোনায় সোহাগা। এখানকার জল, পাহাড় এবং সোনাঝুরির জঙ্গল ডেকে আনে প্রকৃতি প্রেমিককে। প্রাকৃতিক পরিবেশের অপরূপ শোভা উপভোগ করতেই সারা বছর ভ্রমণপিপাসুদের ঠিকানা মুকুটমণিপুর। শীত এবং বর্ষায় প্রকৃতিকে উপভোগ করার সেরা ডেস্টিনেশন জঙ্গল পাহাড় ঘেরা বাঁকুড়ার এই ছোট্ট জনপদ। দক্ষিণের ডুয়ার্সও বলা হয় এই পর্যটনস্থলকে।
উপরি পাওনা হিসেবে রয়েছে কুমারী এবং কংসাবতীর মিলিত জলধারা। সেই দৃশ্য দেখে মন প্রাণ জোরাতে বাধ্য। তাই চাই এই নৌকা বিহারের ব্যবস্থা রয়েছে৷ আর জলবিহারে প্রকৃতি যেন তার অরেইক, তার সন্তানের কাছে ধরা দেবে অনন্য হয়ে। সোনাঝুরি জঙ্গলের রাস্তা বেয়ে পাহাড়ে ওঠার অভিজ্ঞতা না গেলে বলে বোঝানোর নয়৷
নির্জন পাহাড়ের উপরে রাতের অ্যাডভেঞ্চার ভ্রমণের অন্যতম অংশ। রাত্রি যাপনের জন্য রয়েছে টেন্টের ব্যবস্থা। শীতের রাতে হিমেল হওয়াতে টেন্টের মধ্যে এক রাত্রি কাটিয়ে এক অন্য অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতেই পারেন পর্যটকেরা।
ধামসা মাদলের ছন্দে আদিবাসী নৃত্যের তালে নিজে না হয় তাল মেলালেন, সঙ্গে যদি মেলে আদিবাসীদের হাতে তৈরি দেশি মুরগির মাখানি, বাম্বু চিকেন, পাতা চিকেন, রকমারি পিঠে তাতে রদনাতৃপ্তি গবেই হবে একথা হলফ করে বলা যায়। বর্ষা কিন্তু এসে গিয়েছে, কিন্তু পরিস্থিতি সঠিক না হলে এবারের বর্ষা ভ্রমণপ্রেমীদের বাড়ি বসেই কাটাতে হবে৷ তবে শীত আসতে কিন্তু ঢের দেরি। আর এর মধ্যে যদি ঠাকুর ঠাকুর করে কিছু সিউফল মিলে যায়, তাহলে শীতেই ঘুরে আসুন পাহাড়ের রানির কোলে।