বিজেপি নেতা তথাগত রায় ও অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের টুইট
যুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম। অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে ত্রিপুরা ও
মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায় বলেছেন হিন্দু ভাবাবেগে আঘাত করেছেন সায়নী।
আসল ব্যাপারটি কি?
বছর ছ’য়েক আগে শিবরাত্রিতে সায়নী ঘোষের
টুইটার হ্যান্ডেল থেকে একটি মিম শেয়ার হয়। মিমটিতে দেখা যায় শিবলিঙ্গতে কন্ডোম
পরাচ্ছেন এক নারী। পোস্টটি থেকে পরিষ্কার যে যৌন স্বাস্থ্য সচেতনতার কথা ভেবেই
তৈরি মিমটি। যে নারীকে ছবিটিতে দেখানো হয়েছে তাঁকে বুলাদি সম্বোধন করে ক্যাপশন করা
হয়েছে, ‘গডস কুড নট হ্যাভ বিন মোর ইউজফুল।’ আর বিতর্ক এখানেই। তথাগত রায় এর পরেই সায়নীকে উদ্দেশ্য করে লেখেন,
“আমরা হিন্দুরা যাকে পবিত্রতম মনে করি সেই শিবলিঙ্গে আপনি কন্ডোম
পরিয়েছেন। ধর্মীয় ভাগাবেগ নিয়ে খেলার মতো গর্হিত অপরাধ করেছেন আপনি।” তারপরেই আইনি শাস্তিভোগের জন্য সায়নী ঘোষকে প্রস্তুত থাকতে বলেন
তিনি।
যদিও সায়নী বলেছেন এই মিমটি তাঁর শেয়ার করা নয়। সোশ্যাল
মিডিয়ায় সায়নী লিখেছেন, “আমি আগেই বলেছি যে ২০১৫ সালের টুইটটির
বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। এবং যে মুহূর্তে সেটিকে আমার নজরে আনা হয় আমি সেটার
তীব্র নিন্দা করে সবাইকে জানিয়ে ডিলিট করি। আমার নিজের ধর্মকে আঘাত করার কোনও
ইচ্ছে কোনওদিনই আমার ছিল না। আমি সবসময় নিজের বক্তব্য রেখেছি এবং নিজের জায়গা থেকে
নড়িনি। তবে আজকের বিষয়টাকে কেন্দ্র করে যে বিদ্বেষের সম্মুখীন আমায় হতে হয়েছে তা
অত্যন্ত দুঃখজনক। ঈশ্বর এবং বাংলার ও দেশের মানুষের ওপর আমার স্বপ্ন, আস্থা আছে।”
এখানেই শেষ নয়। সায়নী তথাগতর টুইটযুদ্ধে প্রবেশ করেছে
রাজনীতিও। সম্প্রতি সায়নী একটি টক শোতে এসে বলেছিলেন, “যে বাইকে করে শয়ে শয়ে ছেলে জয় শ্রী রাম জয় শ্রী রাম বলতে বলতে যায়,
ঈশ্বরের নাম ভালবেসে বলুন। ভয় দেখানোর জন্য, কারও
পেছনে লাগার জন্য বলার দরকার নেই। সেটা তো আমাদের সংস্কৃতি না। এরপরেই টুইট করে
তথাগত লেখেন, “এই টাইপটাকে দেখে কথায় বলে মূর্খের অশেষ দোষ।
তবে এই মূর্খামির দায় শুধু সায়নীর নয়। পশ্চিমবাংলার বাম ও সেক্যুলারপন্থীরা
শিখিয়েছে। ‘ছি! এসব বলতে নেই। করুক না ওরা কিছু হিন্দু খুন ও
মেয়েদের ধর্ষণ! হোক না সোয়া কোটি হিন্দু গৃহহীন পথের ভিখারি! ওরাও তো মানুষ।”
পাল্টা দিয়েছেন সায়নীও। তবে ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের প্রাক্তন
রাজ্যপালের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেই তিনি জানিয়েছেন, “আলাদা করে কিছু বলার নেই, ওঁনার সাথে আমার ব্যক্তিগত
কোনও সম্পর্ক নেই, ওঁনাকে আমি চিনিও না আলাদা করে। তবে আজকে
সকালে আমি দেখলাম যে উনি আমাকে ট্যাগ করে একটা টুইট করেছেন। আমাকে ট্যাগ না করলে
আমি হয়তো এই কথা কাটাকাটির মধ্যে যেতাম না। দেখুন এটা একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র,
মানুষ তাঁর মতামত রাখবেন এটাই কাম্য। তথাগতবাবু লিখেছেন আমি তার উত্তর
দিয়েছি। অনেকেই অনেক কিছু লিখেছেন। আমি এটুকুই আশা করতে পারি যে এটা কোনও ঘৃণার
জায়গা পর্যন্ত পৌঁছাবে না।”
বিধানসভা ভোট আসন্নপ্রায়। এরমধ্যেই তর্ক বিতর্কের ধারালো
তির ঠিক কোনদিকে ছুটছে তা বোঝা সত্যিই বেশ মুশকিল।