মানসিক জোড়ের কাছে বারবারই পরাজিত
হয়েছে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা। তার অগুণিত নিদর্শনও রয়েছে। এবার সেই মনের জোড়কে
সঙ্গি করেই পাহাড় জয় করলেন এক ব্যক্তি। শারীরিক তথা পারিপার্শ্বিক প্রতিকুলতাকে জয়
করে হিমালয়ের পাহাড় চূড়ায় আরহণ করেন ৪৩ বছর বয়সি ওই ব্যক্তি।
ছেলেটির নাম সঞ্জীব গোহলি। তিনি ভদোদরার
বাসিন্দা। গোহলি শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী, চোখে সামান্য দৃষ্টিশক্তি।
২০০১-এ তিনি রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসা রোগে আক্রান্ত হন, যা
একটি প্রগতিশীল দৃষ্টি ব্যাধি। তারপর থেকেই দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন তিনি। তবুও
হিমালয়ের বুকে দাঁড়িয়ে থাকার স্বপ্ন হারিয়ে যেতে দেনন নি সঞ্জিব। তিনি তাঁর মা এবং
বন্ধুদের সহায়তায় হিমালয়ের শিখরে পৌঁছতে সক্ষম হন।
আরও পড়ুন: সত্তরের 'যুবক'র পাণিপ্রার্থী পঁচিশের যুবতী
আরও পড়ুন: খালি পায়ে পদ্মশ্রীর মঞ্চে তুলসী গৌড়া
হিমালয়ের হাড়হিম করা ঠাণ্ডা
বাতাসের মধ্য দিয়ে পৌঁছান পীর পাঞ্জাল রেঞ্জের ১৭৩৫২ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত
ফ্রেন্ডশিপ পিকে। কাঁধের স্লিং-এর আন্দোলন দেখে ঢাল বুঝেছিলেন। এবং অনুসরণ করেই
প্রতিটি পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে চলেছিলেন তিনি। এই অঞ্চলের পাহাড়ি রাস্তা নতুন
পর্বতারোহীদের জন্য উপযুক্ত বলে মনে করা হয়। রাস্তাটি সুন্দর কারণ যাত্রাটি
সুন্দর হিমবাহ, সবুজ উপত্যকা এবং গভীর বনের মধ্য দিয়ে চলে যায়
শিখরে।
সঞ্জীব চিরকালই পাহাড়, জঙ্গল, উচ্চতা পছন্দ করেন। তবে তাঁর বন্ধুদের সমর্থন
তাঁকে আরও বেশি করেই শক্তি যুগিয়েছে। পাঁচ দিনের অভিযানে তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু তার
কাঁধে একটা স্লিং ব্যাগ আটকে রেখেছিলেন। তাঁদের সমর্থনেই এই অভিযানে সফল হন
সঞ্জীব। যদিও এটি তাঁর প্রথম আরোহণ ছিল না। এর আগে তিনি পাভাগড়, জাম্বুঘোড়া ও ছোট উদেপুরে পাহাড়ে উঠেছেন সুষ্ঠভাবেই।
পর্বতারোহি হিসাবে যাত্রা শুরু
করার আগে সঞ্জীব ভারতীয় ডাক বিভাগের একজন সহকারী ছিলেন। কিন্তু কম দৃষ্টিশক্তির
কারণে তাকে চাকরি ছেড়ে দিতে হয়েছিল। পরবর্তীতে তিনি বিভিন্ন এনজিওর সাথে
ফ্রিল্যান্সিং কাজ শুরু করেন। কাজও তাঁর অসহায়তার প্রতিফলন রয়েছে। প্রতিবন্ধীদের
উপযুক্ত চাকরি খুঁজে পেতে সহায়তা করে এই এনজিও। তারপরেই নতুন উদ্যমে যাত্রা শুরু
করেন সঞ্জীব।