বনগাঁর ছয়ঘড়িয়ার প্রায় সাড়ে তিনশো বছরের পুরনো দূর্গাপুজো
হল ঐতিহাসিক রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামারবাড়ির দূর্গাপুজো। এখানে প্রতিমা দু’হাতে
মহিষদলনী। বাদবাকি হাত গুলি ছোট। তাই এই প্রতিমার পরিচয় গোটা বনগাঁ জুড়ে বিড়ালহাতি
দূর্গা।
অবিভক্ত বাংলার যসোর জেলার ছয়ঘড়িয়া গ্রামে প্রথম অউজোর
সূচনা করেন এই বঙ্গশের পূর্বপুরুষ গৌড়হরি বন্দ্যপয়াধ্যায়। শোনা যায় তিনি স্বপ্নে দেবীর
রূপ পেয়েছিলেন। সেখানেই দেবী দেখা দিয়েছিলেন দুটি সাধারণ হাত ও ৮টি বিড়ালের পায়ের
মতো ছোট ছোট হাত নিয়ে।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ রায়ের পুজোর পরেই কৈলাশে পারি দেন মা, রায় বংশের পুজোর ইতিহাসে জড়িয়ে আছে ঠাকুর বাড়িও
আরও পড়ুন: সমাজ থেকে ব্রাত্য সুবর্ণবণিকরা এগিয়ে নিয়ে চলেছেন মায়ের পুজো
প্রথম থেকে দেবী দুর্গার মূর্তি গরা হত আমকাঠে। সেই ধারা
আজও প্রবহমান। তাই জন্মাষ্টমীতে আমকাঠের
তৈরি নতুন কাঠামোতে সিঁদুর পরিয়ে প্রতিমা তৈরি করা হয়। প্রতিপদের প্রথম দিন
বেলতলায় পুজোর পর ঠাকুর দালানে ঘট বসিয়ে দেবীর প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। একসময়
সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত পশুবলি দেওয়ার নিয়ম প্রচলিত ছিল। বর্তমানে তা বন্ধ।
পরিবর্তে চিনি-নাড়ু দিয়ে নৈবেদ্য দেওয়ার রীতি চালু হয়েছে। দশমীর দিন সন্ধ্যাতারা
উঠতেই প্রতিমা স্থানীয় নাওভাঙা নদীতে নিয়ে গিয়ে দু’টি নৌকোর উপর রেখে
সাতপাক ঘুরিয়ে নৌকো দু'টিকে ধীরে ধীরে দু'দিকে সরিয়ে নিয়ে প্রতিমা নিরঞ্জন দেওয়া হয়। এই ভাবেই যুগের পর যুগ ধরে চলে
আসছে রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামারবাড়ির অনন্য দূর্গাপুজো।